Google Blogger Guide A to Z

![]() |
Barak-valley |
বরাক উপত্যকা
বরাক উপত্যকা, বরাক দক্ষিণ আসাম নামেও পরিচিত ভারতের আসাম রাজ্যের দক্ষিণাংশে অবস্থিত। এই উপত্যকার প্রধান শহর হল শিলচর। বরাক নদীর নাম থেকেই এই অঞ্চলের নাম হয়েছে। বরাক উপত্যকা আসামের তিনটি প্রশাসনিক জেলা নিয়ে গঠিত - কাছাড়, করিমগঞ্জ, এবং হাইলাকান্দি।
এই তিন জেলার মধ্যে, ব্রিটিশ ভারত হওয়ার আগে, কাছাড় ছিল কাছাড়ি রাজ্যের মধ্যে, এবং করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি আসাম প্রদেশের সিলেট জেলার মধ্যে ছিল।
১৯৪৭ সালের বিতর্কিত গণভোটের পর, উভয় অঞ্চলকে সিলেট থেকে আলাদা করা হয়; সিলেটের বাকি অংশ পূর্ব পাকিস্তানের (এখন বাংলাদেশ) এবং ভারতের করিমগঞ্জের মধ্যে ভাগ হয়ে গেছে।
নামকরণ
"বরাক" নামটি 'ব্রা' ও 'ক্রো' শব্দ দুটি থেকে এসেছে। ব্রা অর্থ বিভক্ত হওয়া এবং ক্রো অর্থ উপরের অংশ/শাখা। বরাক নদী করিমগঞ্জ জেলার হরিতিকরের কাছে সুরমা নদী এবং কুশিয়ারা নদীতে বিভক্ত হয়েছে। এই বিভাজিত নদীর শাখা স্রোতকে স্থানীয় মানুষেরা 'ব্রাক্রো' নাম উচ্চারণ করে। বহু বছর ধরে উচ্চারণ বিকৃতির ফলে ব্রাক্রো নামটি বরাকে পরিণত হয়েছে।
জনসংখ্যা
বাংলা বরাক উপত্যকার সরকারী ভাষা, তবে জাতিগত অধিবাসীদের ৮০% এরও বেশি সিলেটি কথা বলেন। বরাক উপত্যকার সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্ম হল হিন্দু ধর্ম। ২০১১ গণনা অনুযায়ী, উপত্যকার জনসংখ্যার ধর্মীয় গঠন এইরকম: হিন্দু ৫০.১% (১,৮১২,১৪১), মুসলিম ৪৮.১% (১,৭৪৪,৯৫৮), খ্রিস্টান ১.৬% (৫৮,৬৭৫), এবং অন্যান্য ০.২%। কাছাড় জেলায় হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ (৫৯.৮৩%), মুসলমানের হাইলাকান্দি জেলা (৬০.৩১%) এবং করিমগঞ্জ জেলার (৫৬.২৬%) মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ।
ইতিহাস
অঞ্চলটি মূলত ত্রিপুরা রাজ্যের অংশ ছিল। ১৫৬২ সালে চিলারাই কাছাড় অঞ্চলকে কচ রাজত্বের সঙ্গে সংযুক্ত করেন এবং তার সৎভাই কমল নারায়ণ এই অংশের শাসনভার নেন।
নর নারায়ণের মৃত্যুর পর, খাসপুর রাজ্য বলে পরিচিত রাজ্যটি স্বাধীন হয়ে ওঠে এবং কমলনারায়নের বংশধরেরা এর শাসন ভার নেন।
সপ্তদশ শতকে, শেষ কচ শাসকের কন্যা কাছাড় রাজ্যের রাজা কে বিবাহ করেন, এবং খাসপুরের শাসন কচ শাসকদের হাতে চলে যায়। তারা শেষ পর্যন্ত মাইবং থেকে খাসপুরে তাদের রাজধানী সরিয়ে আনেন।
১৯৪৭ সালে, যখন সিলেট গণভোটের পর, এই জেলাকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়; সিলেটের পূর্ব অংশটি করিমগঞ্জ নামে ভারতে থেকে যায় অন্য অংশটি পূর্ব পাকিস্তানে চলে যায়।
ভৌগোলিকভাবে, বাংলাদেশের সাথে পশ্চিমের সমভূমির সীমানা ব্যতীত, এই অঞ্চলটি তিনটি দিক থেকে পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত।
বাঙালীর ইতিহাস এর লেখক নীহাররঞ্জন রায় দাবি করেন যে, "দক্ষিণ আসাম/উত্তর-পূর্ব বাংলা বা বরাক ভ্যালি, সংস্কৃতি থেকে ভূগোল প্রতিটি দিকেই, বঙ্গের এর বৃহত্তর সুরমা/মেঘনা উপত্যকা সম্প্রসারণ"।
লোকসভা নির্বাচনী এলাকা
বরাক ভ্যালির দুটি লোকসভা আসন রয়েছে।
করিমগঞ্জ (লোকসভা নির্বাচনী এলাকা)
শিলচর (লোকসভা নির্বাচনী এলাকা)
জেলার তালিকা
করিমগঞ্জ
কাছাড় জেলা
হাইলাকান্দি
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
মৌলানা আব্দুল জলিল চৌধুরী
আবদুল মতলিব মজুমদার
কামিনী কুমার চন্দ
অরুণ কুমার চন্দ
ময়নুল হক চৌধুরী
সৈয়দ মুজতবা আলি
দেবোজিত সাহা
কবীন্দ্র পুরকায়স্থ
ললিত মোহন শুক্লবৈদ্য
সন্তোষ মোহন দেব
ড. জহুরুল হক
উল্লাসকর দত্ত
কামাল উদ্দিন আহমেদ
অচ্যুতচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধি (১৮৬৫-১৯৫৩) প্রখ্যাত ইতিহাসবেত্তা, শ্রীহট্টের ইতিবৃত্ত গ্রন্থের লেখক। তিনি করিমগঞ্জের জাফর গড় পরগনার (পাথারকান্দি থানা) মৌজা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
মাহবুবুর রব চৌধুরী ( জন্ম: ১৯১৫ মৃত্যু: ১৯৯৭) প্রবীণ এই স্বাধীনতা সংগ্রামী পাথারকান্দি থানা ধলাপাড়া চৌধুরী বাড়ি সন্তান ছিলেন। তিনি স্বাধীনতা উত্তরকালে জিপি ও আঞ্চলিক পঞ্চায়েত সভাপতি। করিমগঞ্জ মহকুমা পরিষদ ও স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
জনাব আব্দুল মুক্তাদির চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রী, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক, করিমগঞ্জ।
অধ্যাপক তপোধীর ভট্টাচার্য,এম.এ ত্রিপল,একাধিক স্বর্ণপদক প্রাপ্ত,প্রাক্তন উপাচার্য,আসাম বিশ্ববিদ্যালয়,খ্যাতনামা তাত্ত্বিক,প্রাবন্ধিক,কবি ও বিশিষ্ট সমালোচক,শতাধিক গ্রন্থ প্রণেতা,বহু পুরস্কার ও সম্মানে ভূষিত,আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি বিশেষ ।
করিমগঞ্জ
করিমগঞ্জ হচ্ছে ভারতের আসাম রাজ্যের করিমগঞ্জ জেলার একটি শহর। এটি হচ্ছে জেলার প্রধান শহর এবং জেলা প্রশাসনিক সদর দপ্তর।
করিমগঞ্জ জংশন রেলপথ স্টেশন
'করিমগঞ্জ জেলার সবুজ প্রকৃতি, প্রধানত কৃষি ভিত্তিক জেলা
প্রচার মাধ্যম
করিমগঞ্জের স্থানীয় দুটি পত্রিকা হচ্ছে
দৈনিক নববার্তা প্রসঙ্গ এবং
দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গ
রাজনীতি
করিমগঞ্জ পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে গঠিত। সেগুলো হচ্ছে করিমগঞ্জ উত্তর, করিমগঞ্জ দক্ষিণ, বদরপুর, পাথারকান্দি এবং রাতাবাড়ি। এগুলো সবগুলোই করিমগঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।
বিখ্যাত ব্যক্তি
সৈয়দ মুজতবা আলী: বিখ্যাত বাঙালি লেখক, একাডেমিশিয়ান এবং পণ্ডিত।
মাহবুবুর রব চৌধুরী (জন্ম ২৯.০১.১৯১৫ খ্রীঃ মৃত্যু ০৬.০১.১৯৯৭ খ্রীঃ) প্রবীণ এ স্বাধীনতা সংগ্রামী পাথারকান্দি থানা ধলাপাড়া চৌধুরী বাড়ি সু-সন্তান ছিলেন।তিনি স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রেসিডেন্ট, আঞ্চলিক পঞ্চায়েতের প্রেসিডেন্ট, করিমগঞ্জ মহকুমা পরিষদ ও স্কুল বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া তিনি সত্তরের দশকে একবার নির্দল প্রার্থী হিসেবে পাথারকান্দি আসনে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিকটতম প্রার্থী হিসেবে পরাজিত হন।
কাছাড় জেলা
কাছাড় জেলা, ভারতের উত্তর পূর্বে অবস্থিত আসাম রাজ্যের একটি জেলা। এই জেলার সদর শিলচর শহরে রয়েছে। ঐতিহাসিকদের মতে জেলাটি দক্ষিণ ডিমাসা হিড়িম্বা রাজ্যের অংশ ছিল কাছাড় জেলার আয়তন ৩৭৮৬ বর্গ কিলোমিটার এবং জনসংখ্যা ২০১১ এর জনগণনা অনুযায়ী ১,৭৩৬,৩৯১। বাংলা ভাষা এই জেলায় সরকারী ভাষা হিসেবে স্বীকৃত।
কাছাড়ের সদর শহর শিলচর, আসামের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র। এই জেলার একমাত্র বিমানবন্দর শিলচরে অবস্থিত। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, শিলচর, ভারতের অন্যতম সেরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।
বরাক নদী এই অঞ্চলের প্রধান নদী। কাছাড় সহ করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি জেলা নিয়ে গঠিক দক্ষিণ আসামের বরাক উপত্যকা দেশভাগের পূর্বে এটি বৃহত্তর সিলেটের অন্তর্ভুক্ত ছিলো৷
নামকরণের ইতিহাস
কাছাড় নামটি একটি ডিমাসা শব্দ "কাছাড়ি" থেকে এসেছে কাছাড়ের মূল ইতিহাস কাছাড়ি রাজ্য স্থাপনের সময় থেকে শুরু হয় ৷ জেলাটিতে একটি নগর এবং দুটি ছোট শহর রয়েছে, এগুলো হলো যথাক্রমে- শিলচর, লক্ষীপুর এবং সোনাই
ইতিহাস
কাছাড়ি রাজারা নিজেদের 'হেড়ম্বের প্রভু' বলে মনে করতো সেই কারণেই অনুমান করা হয় যে, কাছাড়ি রাজ্যের পুরানো নাম হেড়ম্ব ছিলো এবং ডিমাপুরের নামও এই হেড়ম্বপুর নামের অপভ্রংশ হিন্দু মহাকাব্য মহাভারতে উল্লেখযোগ্যভাবে হেড়ম্ব বা হিড়িম্ব রক্ষকুলের ও তার রাজত্বের বর্ণনা দেওয়া রয়েছে এবং তার ভগিনী হিড়িম্বার সাথে দ্বিতীয় পাণ্ডব ভীমের বিবাহ ও তাদের পুত্র ঘটোৎকচ এর কাহিনী বর্ণিত আছে ৷
খ্রিস্টীয় ত্রয়োদশ শতাব্দীতে আসামে আগত শান-থাই পরিবারের অহোম জনগোষ্ঠীর লোকের আগমনের সাথে কাছাড়ের ইতিহাস জড়িত৷ ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষদিক থেকে বহু বছর দিখৌ নদী অহম ও কাছাড়ি সাম্রাজ্যের সীমানা নির্ধারণ করতো৷ এই নদীর তীরেই অহোম এবং কাছাড়ি রাজারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়৷
১৫৩৬ খ্রিস্টাব্দে কাছাড়িরা ধানসিঁড়ি উপত্যকা ও নগাঁওয়ের বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখল করে আবার অহমরা কাছাড়িদের যুদ্ধে পরাস্ত করে রাজধানী ডিমাপুরের দখল নেয়৷ কাছাড়ি রাজধানী ডিমাপুর থেকে জঙ্গলাচ্ছাদিত মাহুর নদীর তীরে মাইবং-এ স্থানান্তরিত করেন৷
স্বাধীনতা আন্দোলন
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন কালে এই জেলার জনসাধারণের সক্রিয় কার্যকলাপ ও বিপুল সমর্থন জেলার ইতিহাসকে গৌরবান্বিত করেছে ৷ নেতাদের মধ্যে কামিনী কুমার চন্দ, তার পুত্র অরুণ কুমার চন্দ এবং আবদুল মতলিব মজুমদার প্রমুখের নাম অগ্রগণ্য ৷
যখন অরুণ কুমার চন্দ বাঙালি হিন্দুদের মতৈক্য গঠন করছিলেন তখন আবদুল মতলিব বাঙালি ধর্মের ভিত্তিতে ভারত বিভাজন আটকাতে মুসলমানদের নেতৃত্ব দেন৷ মজুমদার এবং প্রাক্তন ভারতের পঞ্চম রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলী আহমেদর যুগ্ম প্রচেষ্টায় পূর্ব ভারতে মুসলিমদের জন্য আলাদা পাকিস্তান রাষ্ট্রের দাবীর বিরোধী একটি শক্তিশালী মুসলিম সংগঠন গড়ে ওঠে ৷
খ্যাগরিষ্ঠ হাইলাকান্দি কেন্দ্রের ভবিষ্যত মুসলিম লীগমুক্ত করেন৷ তাঁর এই বিজয় মুসলিম লীগের কাছাড় সহ সমগ্র দক্ষিণ আসামকে পাকিস্তানে যুক্ত করার স্বপ্নে বধা হয়ে দাঁড়ায়
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়কাল
১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ১৫ই আগস্ট ভারতের স্বাধীনতার মুহূর্তে সারা পূর্বভারত জুড়ে চরম বিশৃৃঙ্খলা দেখা যায়৷ হিন্দুদের প্রবণতা ছিলো নবগঠিত পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতের দিকে পালিয়ে আসা আবার ভারতের মুসলিমদের প্রবণতা ছিলো আসাম থেকে পূর্ব পাকিস্তানে যাওয়ার ৷
চরম বিশৃঙ্খলা ও দাঙ্গায় ব্যাপক সংখ্যক প্রাণহানি হয়, যা ১৯৫০ আবার হয় ৷ একমাত্র মজুমদার কাছাড়ের ক্যাবিনেট মিশনের সদস্য হিসাবে তার সহযোগী এবং সমমনষ্কদের নিয়ে কাছাড় জেলায় হিন্দু এবং মুসলমান উভয়কে রক্ষা করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন ৷
তিনি কাছাড়ে আগত শরণার্থীদের শরণার্থী শিবিরে নিরাপত্তা দেওয়া ও তাদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ৷
১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে এবং পরবর্তীকালে কাছাড় জেলার ১৯৫৭ থেকে ১৯৬৬ অবধি আসাম ক্যাবিনেটের সদস্য মইনুল হক চৌধুরী বেশ গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করেছিলেন ৷
১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অধীনে তিনি শিল্পমন্ত্রী ছিলেন ৷ স্বর্গীয় অরুণ কুমার চন্দের স্ত্রী জ্যোৎস্না চন্দ ভারতীয় বিধানসভার শিলচর কে উপস্থাপন করতেন ৷
১৭ই আগস্ট ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে সিলেট জেলার সাড়েতিনটি থানা করিমগঞ্জ মহকুমারূপে ভারতের কাছাড় জেলাতে যুক্ত হয় ৷ ১৯৮৩ তে জুলাই মাস পুরাতন কাছাড় জেলা থেকে করিমগঞ্জ মহকুমা জেলায় উন্নীত হয় ৷
আবার ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দ কাছাড় জেলা থেকে নতুন হাইলাকান্দি জেলা ও কাছাড় জেলা তৈরি করা হয় ৷
ভূপ্রকৃতি
কাছাড় জেলার উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে জেলাটির কেন্দ্র ও পশ্চিমভাগে সমতলভূমি অবধি ভূপ্রকৃতির তারতম্য লক্ষণীয় ৷ জল জমে থাকার কারণে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর মাসে সমগ্র জেলার ২০% জমিতে কৃষিকাজ সম্ভব নয় ৷
আবার নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাসে বৃষ্টির অভাবে চাষ জমিতে খরা দেখা যায় ৷ মাটি ছিদ্রযুক্ত ফলে আদ্রতা ধারন ক্ষমতা কম ফলে ভূমিক্ষয় প্রবণ জেলা টির জলস্তর কম ৷ কাছাড়ের প্রধান নদী বরাক নদী যা বড় বক্র নামে পরিচিত ৷
নদীটির একাধিক ছোটো উপনদী রয়েছে যা উত্তর ও দক্ষিণের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে এসে মিলিত হয়েছে ৷ বরাক নদী জেলার অভ্যন্তরে পূর্ব থেকে পশ্চিমে প্রবাহিত এবং সাম মণিপুর সীমানা নির্ধারণ করেছে ৷ বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ৩০০০ মিলিমিটারের বেশি৷
বনভূমি
কাছাড় জেলার ২২৩৬ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল বনভূমি দ্বারা আচ্ছাদিত, যা জেলার আয়তনের ৫৯%৷ বরাইল বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য এই জেলার অন্যতম আকর্ষণ ৷
কৃষিভূমি
কাছাড় জেলা একটি কৃষি প্রধান জেলা এবং মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮০% লোক কৃষিজীবী ৷ ধান এই জেলার প্রধান উৎপাদিত ফসল, তাছাড়াও সরষে, দানাশস্য, পাট ও ব্যাপকহারে উৎপাদিত হয় ৷ জেলাটিতে বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভর করে ঋতুভিত্তিক ফসল ফলানো হয় ৷ প্রাথমিকভাবে কৃষিকাজ থেকে জেলার মোট আয়ের সরাসরি ৪০% আসে আবার কৃষিজাত পদার্থ ১৪% আয়ের উৎস ৷
অর্থনীতি
কাছাড় জেলা হলো আসামের অন্যতম শিল্প-অনুন্নত একটি জেলা ৷
জেলাটিতে পুরানো ব্রিটিশ আমলের চা-বাগান কেন্দ্রিক শিল্প ছাড়া আর সেরকম কোনো ভারী শিল্প নেই ৷ শিলচর শহরের অবস্থান, বাজার ও যোগাযোগ সুবিধার জন্য বিগত দশ বছরে জেলাটি শিল্পে উন্নতি করেছে জেলাটির শিল্পগুলিকে এভাবে ভাগ করা যায়,
১) খাদ্য এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ,
২) বনজ সম্পদ,
৩) পরিবহন সামগ্রী প্রস্তুতকরণ এবং
৪) সুতি শিল্পের বড় সংখ্যায় লোক লৌহ শিল্প, রং শিল্প, বস্ত্র প্রস্তুতি,
মাদুর শিল্প প্রভৃতি কুটির শিল্পের সাথে যুক্ত ৷ প্রচুর পরিমানে বাঁশ, আনারস এবং আখ উৎপাদন হওয়ার জন্য এখানে কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে উঠেছে৷ প্রায় ৪০ একর জমির ওপর সমস্ত বৃৃহত্তর শিল্প গুলি গড়ে উঠেছে৷
কাছাড় জেলার নদ নদী গুলি নিম্নরূপ:
বরাক নদী
সুরমা নদী
জিরি নদী
মধুরা নদী
চিরি নদী
কাটাখাল নদী
সোনাই নদী
গড়গড়ী নদী
রুকিনি নদী
জাতিঙ্গা নদী
হারাং নদী
পরিবহন ও যোগাযোগ
রেলপথ
কাছাড় জেলা রেলপথে আসাম রাজ্যে রাজধানী গুয়াহাটি ও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে যুক্ত ৷ জেলার রেলপথ উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলপথের লামডিং রেল বিভাগের অন্তর্গত ৷
জেলাটির ওপর দিয়ে আরোনাই সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস (২য় দীর্ঘতম), তিরুবনন্তপুরম-শিলচর সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস (৩য় দীর্ঘতম), হামসফর এক্সপ্রেস (৯ম দীর্ঘতম), শিয়ালদহ-শিলচর কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস, নতুন দিল্লি-শিলচর সম্পর্কক্রান্তি এক্সপ্রেস প্রভৃতি ট্রেন দীর্ঘায়িত ৷
জেলাটির স্টেশনগুলি হলো:
বান্দরখাল রেলওয়ে স্টেশন
দাম ছড়া রেলওয়ে স্টেশন
চন্দ্রনাথ পুর রেলওয়ে স্টেশন
বিহারা রেলওয়ে স্টেশন
হিলারা রেলওয়ে স্টেশন
সুকৃৃতিপুর রেলওয়ে স্টেশন
শালচাপরা রেলওয়ে স্টেশন
শ্রীকোনা রেলওয়ে স্টেশন
অরুণাচল জংশন রেলওয়ে স্টেশন
শিলচর রেলওয়ে স্টেশন
নিউ শিলচর রেলওয়ে স্টেশন
ময়নারবন্দ রেলওয়ে স্টেশন
রাণীগাঁও রেলওয়ে স্টেশন
শ্রীবার রেলওয়ে স্টেশন
কামরাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশন
জিরিঘাট রেলওয়ে স্টেশন
বিমানপথ
শিলচর বিমানবন্দর শিলচর শহরের নিকটে অবস্থিত, যা মূল শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে কুম্ভীর গ্রামে অবস্থিত ৷ এই বিমানবন্দর ১৯৪৪ সালে ব্রিটিশ সরকার চালু করে। এটি কুড়িগ্রাম এয়ার বেস হিসেবে পরিচিত। এই বিমানবন্দর থেকে বেসামরিক বিমান পরিবহন চালু রয়েছে। একই সঙ্গে এটি ভারতীয় বায়ু সেনার একটি বিমান ঘাঁটি। এই বিমানবন্দর থেকে প্রতিদিন ৪ থেকে ৫ টি বিমান ওঠা-নামা করে এবং সপ্তাহে মোট প্রায় ৩০ টি বিমান চলাচল করে। এই বিমানবন্দরটি উত্তর-পূর্ব ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম ও ব্যস্ততম বিমানবন্দর।
ই বিমানবন্দর থেকে গৌহাটি, কলকাতা, ইম্ফল, আগরতলা ও যোরহাট বিমানবন্দরে বিমান পরিচালনা করা হয়।
শিলচর থেকে উত্তর পূর্বে কুম্ভীরাতে শিলচর বিমানবন্দর যাওয়ার পথে সালগঙ্গা বিষ্ণু মন্দির পর্যটকদের অন্যতম তীর্থস্থান৷
জাতিঙ্গা পাখি প্রদর্শনী কেন্দ্র
বরাইল বন্যপ্রাণ সংরক্ষনালয়
অরুণাচল কালীবাড়ি
শিলচর বঙ্গভবন
শিক্ষা
কাছাড় জেলার উত্তর পূর্ব ভারতের কিছু বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৷ জেলা সদর শিলচর শহর আসামের শিক্ষার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র ৷ শিলচর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে দরগা কোণাতে আসাম বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যা একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিলচর শহরে একটি রাষ্ট্রীয় প্রযুক্তিবিদ্যা প্রতিষ্ঠান রয়েছে৷ দক্ষিণ আসামের একমাত্র চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় শিলচর শহরে অবস্থিত ৷
মহাবিদ্যালয়
জেলাটিতে একাধিক ডিগ্রী কলেজ রয়েছে৷
কাছাড় কলেজ
গুরুচরণ কলেজ
রাধামাধব কলেজ
রামানুজ গুপ্ত স্মৃৃতি জুনিয়র কলেজ
জনতা কলেজ, কাবুগঞ্জ
মাধব চন্দ্র দাস কলেজ, সোনাই
ওমেনস' কলেজ, শিলচর
আরিয়ান জুনিয়র কলেজ
বিদ্যালয়
জেলাটির কিছু বিখ্যাত বিদ্যালয় হলো:
সেন্ট ক্যাপিটানিও স্কুল
আধার চন্দ্র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়
কাছাড় উচ্চ বিদ্যালয়
ডন বসকো স্কুল, শিলচর
দীননাথ নবকিশোর উচ্চতর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় (স্বদেশী স্কুল)
ওরিয়েন্ট হাই স্কুল
হোলি ক্রস স্কুল
জওহর নবোদয় বিদ্যালয়, পাইলাপুল
শিলচর কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়
মহাঋষি বিদ্যামন্দির
মুক্তশ্রী উচ্চ বিদ্যালয়
নরসিংহ উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়
প্রণবানন্দ হোলি চাইল্ড স্কুল
প্রণবানন্দ বিদ্যামন্দির
শিলচর কলেজিয়েট স্কুল
সোনাই যুবতী সিংহ মণিপুরী উচ্চ বিদ্যালয়
সাউথ পয়েন্ট স্কুল, শিলচর
অক্সফোর্ড স্কুল, শিলচর
প্রশাসনিক বিভাগ
কাছাড় জেলা দুটি মহকুমাতে বিভক্ত , যথা:
শিলচর মহকুমা
সোনাই মহকুমা
পাঁচটি তহশিল হলো:
১) কাটিগড়া তহশিল ২) উধারবন্দ তহশিল ৩) শিলচর তহশিল ৪) সোনাই তহশিল ৫) লক্ষীপুর তহশিল
জেলাটিতে ১৫ টি উন্নয়ন ব্লক রয়েছে৷ সেগুলি হল-
কাটিগড়া উন্নয়ন ব্লক
শালচাপড়া উন্নয়ন ব্লক
বড়খোলা উন্নয়ন ব্লক
কালাইন উন্নয়ন ব্লক
শিলচর উন্নয়ন ব্লক
উধারবন্দ উন্নয়ন ব্লক
তাপাং উন্নয়ন ব্লক
সোনাই উন্নয়ন ব্লক
বড়জলেঙ্গা উন্নয়ন ব্লক
নরসিংহপুর উন্নয়ন ব্লক
পালনঘাট উন্নয়ন ব্লক
বাঁশকান্দি উন্নয়ন ব্লক
বিন্নাকান্দি উন্নয়ন ব্লক
রাজাবাজার উন্নয়ন ব্লক
লক্ষীপুর উন্নয়ন ব্লক
৭ বছরের মেয়েকেধর্ষণ করল বাবা ! খুন
গুগল ব্লোগ্গিং করে মাসিক আয় করুন ৫০,০০০ টাকা ! সম্পূর্ণ বিস্তারিত ।
লকডাউনের সময় 150 উপায়ে ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করুন
কোয়ারানটিনে হোটেলেসেক্স! যৌনকেচ্ছাই ছড়াল করোনা...
'বিকাশ ভুল ছিল,দেশের আবর্জনা সাফ হলো ! ভালোই হলো ।
সুখবর, সহস্রাধীক সরকারি চাকরী শীঘ্রই এপলাই করুন।
আসতেসে ঘূর্ণি বাতাস 'আমফান'পশ্চিম বঙ্গ এবং আসামের কোন জিলায় জারি হয়েছে সতর্কবাণী?
নগদ অর্থ উপার্জন করতে চান?? 60 টি উপায় ।
আসাম NHM চাকরি, আসাম Irrigation Result 2020
কীভাবে ইউটিউব দিয়ে অর্থোপার্জন করবেন?
অর্ণব গোস্বামী: টিভি রেটিংয়ের জন্য নাটক ?
৩ মে-রপর কি লকডাউন উঠছে? আজ বৈঠকে কী বললেন রাজনাথসি
29 বছরের ছেলে60 বছরের মা'কে ধর্ষণকরেছে! পালঘর লিনচিং !
Comments
Post a Comment
Please do not enter any spam link in the comment